পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারি, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

Alor Sandhane - আলোর সন্ধানে

ছবি
নবম পর্বঃ অবতার ও পূর্ণব্রহ্ম : মতুয়ারা শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুরকে পূর্ণব্রহ্ম পূর্ণাবতার বলেই মানেন । এই ‘ পূর্ণব্রহ্ম ’ ও ‘ অবতার ’- এর ধারনাটি আমাদের কাছে পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন । শ্রীমত্ অশ্বিনী সরকার একটি গানের শেষ ছত্রে বলেছেন ------   “ সেই হরির নাম ল ’ য়ে এবার , এল ‘ হরিশ্চন্দ্র ’ আমার , কলির জীব করিল নিস্তার , অশ্বিনী নামে হ ’ ল বাম । ” (“ শ্রীশ্রীহরি সঙ্গীত ”)   শ্রীশ্রীহরি - গুরুচাঁদ ঠাকুরের পরম ভক্ত অশ্বিনী গোঁসাইয়ের এই গানটি হতে পরিস্কার বোঝা যায় যে এই ‘ হরিশ্চন্দ্র ’ অর্থাৎ ‘ হরিচাঁদ ঠাকুর ’ আর ‘ সেই হরি ’ অর্থাৎ ‘ বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা ’ বা ‘ পরম শক্তি ’ এক নয় । হরিচাঁদ ঠাকুর অধর্মের ( যা যুগ যুগ ধরে মানুষকে ‘ ধর্ম ’ বলে বোঝানো হয়েছিল ) সমস্ত রকম অবাঞ্ছিত বেড়াজাল ভেঙে দিয়ে হাতে কাজ ও মুখে হরিনামের মাধ্যমে পবিত্র গৃহ ও সুন্দর সমাজ গঠনের মধ্য দিয়ে ‘ সেই হরি ’ অর্থাৎ ‘ অসীম শক্তি ’ র সাথে যোগাযোগের এক নবদিশা দেখিয়েছেন । সীমার মধ্যে থেকে অসীমের মাঝে মিলনের এমন সুন্দর পথ আর হতে পারে না । তাহলে হরিচাঁদ ঠাকুর কি পূর্ণাবতার বা পূর্ণব্রহ্ম নয় ?   অবতার কথার ...

Alor Sandhane - আলোর সন্ধানে

ছবি
অষ্টম পর্বঃ ভক্ত ও ভক্তি : ভারতবর্ষ বহু প্রাচীনকাল হতেই ধর্মভিত্তিক একটি দেশ হিসেবে পরিচিত এবং এদেশকে আধ্যাত্মিকতার পীঠস্থানও বলা হয় । মন্দির , মসজিদ , গির্জা ইত্যাদি কোনোটার - ই অভাব এখানে নেই এবং উত্তরোত্তর সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েই চলেছে ! প্রতিবৎসর কত টাকা যে ইনভেষ্ট হয় এসবের জন্য তার সঠিক হিসেব নেই । তবে এগুলি যে দানের টাকা তা নিঃসন্দেহে বলা যায় ! এই দান দেয় কারা ? অবশ্যই ভক্ত যারা ! এই টাকা কিভাবে বা কারা ভোগ করেন সেটা সহজেই অনুমেয় । তবে ভারতবর্ষে যে ভকতসুজনদের কোন অভাব নেই একথা স্বীকার করতেই হবে ! এদের মধ্যে আবার অনেকে প্রতিষ্ঠিত নামী মানুষ আছেন যারা অনেকের চোখে মহান ব্যক্তিত্ত্ব ! যে দেশে ভক্তের অভাব নেই , সেখানে এত সামাজিক অনাচার ও দুর্নীতি কেন ? কিসের অভাব ?? এরই উত্তর দিয়েছেন এবং দিশা দেখিয়েছেন হরি - গুরুচাঁদ ঠাকুরের পরম ভক্ত ‘ সাধক ’ অশ্বিনী সরকার । তিনি একটি গানে বলেছেন ---- ---   “ ভক্তি কে যে তুচ্ছ করে মুক্তি ক ’ রে শ্রেষ্ঠ । হরি নামে পাপ খন্ডে     ব্যাখ্যা ক ’ রে সেই দুষ্ট ।। ”   আমরা বেশীর ভাগ মানুষই বাস্তবতা ভুলে নানারকম অলৌকিকতা ও বাহ্যিক উপাচার নিয়েই মত্...

Alor Sandgane - আলোর সন্ধানে

ছবি
https://shrishriharichandthakur.blogspot.com সপ্তম পর্বঃ মতুয়া ধর্ম ‘ বেদ - বিধি ’ র মধ্যে আবদ্ধ নয় : https://shrishriharichandthakur.blogspot.com শ্রীশ্রীহরি - গুরুচাঁদ ঠাকুরের চিন্তাধারা - কর্মধারা কোন বাঁধা - ধরা গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । স্থান এবং কালের সাপেক্ষে মানুষের কাছে যা কিছু মঙ্গলকর তা ’ ই গ্রহণযোগ্য । তাঁদের প্রতিটি কথায় ও কাজে এর পরিচয় পাওয়া যায় । হরিচাঁদ ঠাকুর ‘ সতীদাহ প্রথা ’   সম্পর্কে বলেছিলেন ------“ যারা শাস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নিরাপরাধ , অসহায় মাতৃ জাতিকে জ্যান্ত পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে , সেই শাস্ত্র - গ্রন্থ আমি মানি না ” । আরও বলতেন ------“ মানুষের জন্য শাস্ত্র , কোন শাস্ত্র - গ্রন্থের জন্য মানুষ নয় ” । তিনি সমস্ত ধর্মীয় গন্ডীর বাইরে বেরিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন সর্বক্ষেত্রেই । হরিচাঁদ ঠাকুরের ‘ সঙ্গী - সাথী ’- দের মধ্যে অনেক মহাপ্রাণ ভক্তরা ছিলেন । তৎকালীন কঠিন সামাজিক পরিস্থিতিতে মানুষকে সংঘবদ্ধ করা ও হরিনাম প্রচারের জন্য এদের অবদান ছিল অসামান্য । শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুরের তিরোধানের পর অনেকেই চরম উদাসীন হয়ে পড়েন কারণ , প্রেমেতে বিভোল ভক্ত ’ রা শ্রীশ্রীহরি ...

Alor Sandhane - আলোর সন্ধানে

ছবি
ষষ্ঠ পর্বঃ শ্রীশ্রীহরি - গুরুচাঁদ ঠাকুর ও আলোর পথ : ঊন - বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বাংলা তথা সমগ্র ভারতবর্ষে এক ঘোর তমসাময় পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল একশ্রেণীর মানুষের দ্বারা । এরা কোন বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত নয় । যারা অলীক ধর্মের নামে , শাস্ত্র - গ্রন্থের নাম করে মূলনিবাসী - দের সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে দাসত্বের শৃঙখলে আবদ্ধ করেছিল কয়েক শত বৎসর । নিজেদের স্বার্থ কায়েম করবার জন্য , ছলে - বলে - কৌশলে সমাজকে ঠেলে দিয়েছিল এক অন্ধকারাচ্ছন্ন নরকে ; এমনকি রাজশক্তিকেও এরা  করেছিল কব্জাগত । হিন্দু রাজার সময় এরা সেজেছে বড় পুরোহিত আবার মুসলীম রাজার সময় এরাই গো - মাংস ভক্ষণকারী ! এককথায় এরাই হল ‘ ব্রাহ্মণ্যবাদী ’ । কোন বিশেষ সম্প্রদায় নয় । সমাজের সেই ঘোর তমসাময় অবস্থায় মানুষ রাস্তা দিয়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকারও হারিয়েছিল ; ছিল না কোন মর্যাদা । ধর্মের নামে এত অত্যাচার , শাষন ও শোষনে মানুষ ভুলতে বসেছিল তাঁর আত্মধর্ম । নিজেকে হীন ভাবতে শুরু করেছিল এবং শুরু হয়েছিল ধর্মান্তরিত হবার প্রবণতা ও যুগ সংকট । এই যুগ সংকট থেকে মুক্ত হবার উদাত্ত আহ্বান নিয়ে ১৮১২ খ্রীষ্টাব্দের ১১ই মার্চ বুধবার পূর্ববঙ্গের ফ...